বিশেষ জ্ঞাপন--সম্পাদকীয়--

বিশেষ জ্ঞাপন--

***অসম্পূর্ণ ব্লগ পত্রিকাকে নতুন ভাবে সাজানো হল। লেখক / লেখিকার লেখা যা যা ছিল সেই সেই মত রাখা হয়েছে। কেবল সামান্য ত্রূটি বিচ্যুতি মুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। পোস্টিং ডেট আলাদা হলেও সংখ্যাটি উল্লেখিত সময় এপ্রিল-জুন, ২০১৯, প্রথম সংখ্যার কপি মাত্র। সম্পাদকীয়--

অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম একটা পত্রিকা প্রকাশ করবো বলে। নানা ঝামেলায় তা আর হয়ে উঠছিল না। শেষে ছাপা পত্রিকার ভাবনা থেকে নেমে এলাম অনলাইন পত্রিকার দিকে। ব্যাপারটা হাতে নিয়ে দেখলাম এ ব্যাপারেও আমার অভিজ্ঞতা অনেক কম। তবু মনের প্রবল ইচ্ছা আমায় অঙ্গীকারের দিকে ঠেলে দিলো--স্বরধ্বনি পত্রিকার প্রথম প্রকাশের দিকে আমি অনেক বাধা ঠেলে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করলাম। এবং তার ফল স্বরূপ যা পেলাম তা ত্রুটি পূর্ণ হলেও পেলাম। সম্পাদনা করাও একটা মহা ব্যাপার--কাকে রাখি আর কাকে ফেলির মাঝ দিয়ে কত না স্থিতি- স্থাপকতার টানাপোড়েন ! অনেক সম্পাদককে জানাতে দেখেছি, নামী দামী লেখক নয়, নামী দামী লেখারই আমরা মূল্য দিই। কথাটি কতটা অসত্য তা সম্পাদক মাত্রই মনে মনে অনুভব করতে পারেন। তবে এ কথা বলতে আমি লজ্জা পাচ্ছি না যে ব্লগ ব্যাপারটায় আমার জ্ঞান পরিধি বড় সীমিত। তার ত্রুটি বিচ্যুতি আপনাদের চোখে নিশ্চয় ধরা পরবে আমি জানি। আপাতত এ ব্যাপারে আমার ক্ষমা চেয়ে পার পাওয়া ছাড়া আর যে কোন গতি নেই !

স্বরধ্বনি শুধু মাত্র কবিতার পত্রিকা। এখানে ছোট বড় দীর্ঘ গুচ্ছকবিতা স্থান পাবে। আগামীর পরিবর্তন আগামী বলে দেবে। এবারের সংখ্যাটা সংক্ষিপ্ত ও সীমিত মাপের হল। নামী দামী লেখকের সঙ্গে সঙ্গে উন্নত মানের লেখাও আমাদের কাম্য। আগামী সংখ্যায় তা হলে আরও উন্নত ও পাঠক রুচি সম্পন্ন লেখা দিতে পারবো আশা রেখে এখনকার মত সম্পাদকীয় বক্তব্য শেষ করছি।

বিশেষ কথা ও সম্পাদকীয়--

ধন্যবাদ--স্বরধ্বনির পক্ষ থেকে--

তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক,

স্বরধ্বনি ত্রৈমাসিক পত্রিকা।


তাপসকিরণ রায়ের কবিতা

 

তাপসকিরণ রায়ের কবিতা-- 

 

বেজন্মা  

 

আগাছা

পতিত জমিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে

আনন্দ পুলক

পাতাল নদীর জল সেঁচন হয়ে যাচ্ছে

জীবন ঘোটালা পাকাচ্ছে

বেজন্মাদল।

 

হ্রেষা ধ্বনি

 

বয়সকে ধরা যাবে না

পুলকিত ধ্বনিগুলি অন্তহীন

শৈশব, কৈশোর

যৌবন ছিঁড়ে আবার জুড়ে যাচ্ছে

অনায়াস স্বপ্ন

নদীর ভেসে যাচ্ছে  

হ্রেষা ধ্বনিতে তোমার বয়েস ধরা যাচ্ছে না !

 

প্রসব

 

আগুন

তুমি সমাপ্তি।  

তবু জেঁকে নাও শীতাতপ উষ্ণতা।  

কিছু নেই

একটা তারতম্য নাতিশীতোষ্ণ প্রেমিকা  

জলজ লিলির মত ভাসমান শরীর

তোমার তলদেশ চিরে

সন্তান

কষ্ট প্রসবে মা ফিরে আসে।

 

বাসনা

 

বাসনা

আসলে ধোঁয়া,

তুমি বারবার হাত মারলে  

অস্বাভাবিক শ্বাস নিতে নিতে

একটা নারী বেরিয়ে আসছে।

 

রাজা

 

আঘাত

বাস্তব পৃথিবীটার অনুভব নেই

ব্যাঘাত তুমি নিদ্রাহীন রজনীর অসফল নায়ক

এক জাগায়

আমরা সবাই নায়ক

একক।  

 

নায়িকা থাকছে,

সে বেড়ে উঠছে কোন এক রাজার দেশে

রাক্ষস না হলে একটা কাহিনী পূরণ হবে না

আর নায়কের পঙ্খিরাজ ঘোড়া চাই

মাঝখান বিঘ্নতার অনেকটা সময় কেটে যায়

দীর্ঘ দু আড়াই ঘণ্টা সময় হনন করে--

আঙ্গুল কামড়াই, ভাবি বিকল্প কি কিছু করা যেত !

কাজের ওপর পোক্ত একটা বুনিয়াদ

লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের নামে একটা রাজপ্রাসাদ গড়ছে

হারেমের রাতকক্ষগুলি নারী নিদ্রাহীন

হিংসা কিলায় হঠাৎ যুদ্ধ নামে   

ঘুমন্ত সৈনিকেরা জেগে উঠছে

পঙ্গপালের মত দাউদাউ পাখনা পুড়ছে

খয়রাত, একটা রাজা থেকে আরও একটা রাজা প্রসবিত হচ্ছে।

 

তোমার মুঠোয়

 

অজানা পথ

তবু ঘুরে ঘুরে তোমার ঠিকানা

ভ্রম নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মিশে গেছি একটা গবেষণাগারে

সেখানে ভালবাসা চাষ হয়

আনুষঙ্গিক ফুল চাষে মন দিয়েছি

মালা হাতে সন্তানেরা ঘুরে ফিরছে।  

 

ঘরের ভালবাসা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে--

দীর্ঘ ভালবাসা ধরতে একটা চালাঘর ও বৌয়ের সৃষ্টি,

শক্ত মাটিতে সে স্বামীর বীজ বুনছে।  

খুনসুটিতে ভালবাসার গন্ধ

একটা মজা কাঁঠাল

রগড়ানো তেলের মাঝে ব্যভিচারী গন্ধ বের হচ্ছে।  

ফুড়ুৎ

সময় ও সুযোগের  

পকেটের বাঁধা প্রেম পত্র

গুঁজে দেওয়া হল না আর তোমার মুঠোয়।

শ্রীমতি রীতা চট্টোপাধ্যায়

 

আশ্বাস

শ্রীমতি রীতা চট্টোপাধ্যায়


প্রতিনিয়ত দ্রুত আন্দোলনের গতিতে,

মনের খরস্রোত ব'য়ে চলে জীবন সাগরে,

অনন্তকালের আবহমানে, 

কঠিন স্বপ্নগুলো...

শৃঙ্খলার জালে আবদ্ধ থাকে।

ক্ষণিকের জন্য রচিত হওয়া...

সুখ-দু:খ, প্রেম-ভালোবাসা,

 গতিময় মনণের কোলাহলে,

মূহুর্তের ভ্রম প্রহেলিকায়, দিন গোনে।

এরই মধ্যে জাগরিত হয় মূহুর্তের...

সুপ্তমৌনতার সফল চাবিকাঠি  

গহন-আঁধারের সিক্ততায় আহত হওয়া

আকুল মৌন মন কাঁদে ব্যর্থতায়।

রিক্ত জীবনের অবক্ষয় ধীরে ধীরে

সমাধানহীন যুদ্ধ ঘোষণা করে---

দিকভ্রান্ত শিল্প, তুলির অন্বেষণে,

মৌন উচ্চারণের মাঝে---

ব'য়ে বেড়ায় ব্যর্থ প্রেমের তলানী।

খন্ড খন্ড চিত্রগুলো অসম্মানে

হাহাকার করে----

কঠোর মননের আহত রিক্ততায়,

তবুও জীবন, ব্যর্থতার নতুন আঙিনায়,

তুচ্ছ যন্ত্রণাময় সার্থকতা খোঁজে।


শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

চক্র

শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

সহস্রার নাগাল পাওয়া একে দুর্গম

তার ওপর মূলাধার বড়ো মোহময়

হয়তো বা ছেড়ে আসা খুব কিছু নয়,

তবুও কি সত্যি তাকে ছেড়ে আসতে চাও?

ঘুরেফিরে কাটা ঘুড়ি মাটিতেই পড়ে,

বিষ ওঠে নাড়ি বেয়ে অমৃতের খোঁজে,

নামে কোন রসায়নে মণিপুর ছেড়ে?

 

তুমি বলো সংসার বীরের আবাস

পরমাত্মা – তিনিও বলহীনের লভ্য নন

কিন্তু ‘বীরভোগ্যা বসুন্ধরা’র স্পর্ধাবাণী?

তাই দিয়ে বসুধাকে বেঁধে রেখে ফেলে,

প্রকৃতি পূজারি হয়েও তাকেই কাঁদাও?

সেই কান্না শুধু কেন নারী চোখ খোঁজে?

রক্তস্নান যেন তার অমোঘ নিয়তি!

 

এত অশ্রু, তবু কৈ প্লাবন কোথায়?

প্রলয় ঘটাতে পারি, কিন্তু বড়ো মায়া,

হাত-পা-মুখ-মন বাঁধা তার কাছে

আক্রোশে ছুঁড়ে ফেলি কাঁচের বাসন –

তারপর আতঙ্কে নিজেই সাফ করি

পাছে কোনও পদাঘাতী পা কেটে যায়

ক্ষমা করা অকর্তব্য জেনেও বারবার

শুশ্রুষা করে চলি স্বার্থপরতার,

কামনার বিষপান অমৃত জেনে

আলমগীর সরকার লিটনের কবিতা

 

আলমগীর সরকার লিটনের কবিতা-- 

নতুন মুখ

 

নতুন মুখের ভিরে আমি হয়ে যাচ্ছি জীবন্তলাশ

অথচ নতুন বাঁশপাতার বাতাস আমাকে স্পর্শ করে না;

সবুজ তারুন্য লতাপাতারও কি পরিবর্তণ যেনো

অপরিচিত মর মর শব্দধ্বণির আর্তনাদ- তারপরও

আমি তোমাদের দলে হাঁটতে চাই!ঐ চাঁদ পূর্ণিমার

রাত জুড়ে- নতুন মুখ আমাকে রাখিও নিভু নিভু –

 

জোনাক জ্বলাপ্রদীপে কিংবা সোনালি আইলপাথরের

সতদল ঘাসফড়িংএর ডগায়অথবা ইটভাঙ্গা রাস্তার মোড়

তোমরা জানাতে চাইবেনা পূর্বপুরুষের কথামালা

নতুন মুখ পীচনেহাটবে না তবুওসংশয় জীবন্ত লাশনয়

বাঁচতে চায় আরকিছু ক্ষণ শুধুবর্ণমালার পরিচয়

অতঃপর নতুন মুখেরসংশয় হোক নাবিশ্বময়।

 

 

অতলস্পর্শ 

 

নিঃশ্বাসের ডগায় থমকে গেছে রঙিলা পৃথিবী!

সাদা, নীল, লাল, সবুজে বর্ণচূড়ার কি যে খেলা-

মাঝে মাঝে অতলস্পর্শ সরিয়ে নিয়ে যায় অদূরে;

তবুও পৃথিবীর আলোকে অতিদর্প দেখি অবেলায়;

কত বক, শালিকের জমাট আর্তনাদ শুনতেহয়েছে,

বুঝোনি- আহত শরীরগন্ধ মিশায় মৃত্তিকায়- অথচ 

কি অতিদর্পী হেঁটেই গেলেএক দাবালন মাঠরেখে-

অথৈ সমুদ্রভাসমান যাত্রী কিংবাজোনাকির নিভু 

নিভু আলোক জ্যোতি ফুরানো, প্রেমময় দেখবেকে?

বার বার কাছেডাকে এক অতলস্পর্শ মাঠঘাট।

 

জলক্লান্ত পন্থ 

 

নিত্য ক্ষণে কি জানি এক গন্ধ 

তাড়া করে যায়- ভীষণ গন্ধের নিকুঞ্জ আভাস- 

সেখানেই শুধু জীবন্ত লাশের বাসর করা বন্ধ;

ভাবনার জ্বলন্ত কুড়ায়- রোজ ক্ষত

বিক্ষত- ভাজা হয় এক চন্দ্র।

 

 

তবুও মাঝে মাঝেবিষন্ন মেঘ ভেসেযায়-

অদূর গাঁয় অথবাগাংচিলের বিলে কিংবামেঘলা রাত-

সেখানেও খুঁজে পায়কিছু জীবন্ত লাশেরসংশয়-

আহা কি সহ্যযন্ত্রনার জলক্লান্ত পন্থ-

অতঃপর শেষ হয়েওহলো না শেষক্ষান্ত।

শামীমা সুলতানার কবিতা

 

শামীমা সুলতানার কবিতা--

 

আত্ম সমাধানে বিবেক

 

চন্দ্র, সূর্যের ঋণে আবৃত অনন্তকাল

বিবর্তনে অন্য চেষ্টা হবে যে নিষ্ফল।

মেকির উজ্জ্বলতায় হলে জ্ঞান শূন্য

পরাস্ত মন হিসেব কষে পাপ পুণ্য।

 

কর্মের পূর্বে সাজাও নিজ পরিকল্পনায়

ব্যতিক্রমে অনিষ্ট হবে জীবন যাত্রায়।

করো আত্ম প্রশ্ন স্বীয় বিবেকের কাছে

প্রাপ্ত হবে তুমি ভালো যা কিছু আছে।

 

মুখোমুখি আমি আর অন্ধকার

 

তোমার উপহার আজ নিস্তন্দ্র রজনী

জানতে চেওনা কেমন আছি সজনী!   

আঁধারের সাথেই আজন্ম করেছি বাস

প্রদীপ হয়ে এসেছিলে ক্ষণিক দিবস।

 

ইন্দ্রধনুর আবেশেও হয়েছি নিরাশ! 

সম্মুখ স্বপ্নরা হয়েছে আজ বড্ড ত্রাশ।  

মুখোমুখি ছিলাম বেশ আমি আর অন্ধকার

উপহার আজ ক্ষরণ, যন্ত্রণা আর হাহাকার।

 

আলো আঁধারের উন্মাদনায় পরিশ্রান্ত আমি

কেমন আমার বর্তমান? জানে শুধু অন্তর্যামি।

তবুও তো বেঁচে আছি নিয়মের বেড়াজালে

জলের ফোটা লুকিয়ে চোখের আড়ালে।

 

অদৃশ্য বিপন্ন

 

রিমুট পরিবর্তনে পাই যন্ত্রটা স্বাভাবিক

অনুভবে স্পষ্টতায় ক্ষতটা অস্বাভাবিক।

বিন্দু বিন্দু ক্ষত, বিবর্তনে সৃষ্ট গভীরতায়

যেন সমুদ্রের আবির্ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারায়।

 

হিসেবের স্বচ্ছতা নিয়ে, চলুক জীবন

হতে পারে ক্ষুদ্র ত্রুটি ধ্বংসের কারণ।

তুমি আমি, আমি তুমি, সবাই সবার

সকলে করি কাজ, বর্জনে অহংকার। 

 

গড়তে সকল কিছু সময়, শ্রম দরকার

ধ্বংসে নেই মুহুর্ত, থাকে না অপেক্ষার।

 

শুদ্ধ সমাজ

 

খোশপোশাকি! যতোই থাকো বিলাসিতায়

বাহ্যিক পরিবর্তনেও চরিত্র নাহি বদলায়।

যা কিছু দৃশ্যমান শুধুই মেকির আবরণ

ঝেড়ে ফেলো নকল, করো শুদ্ধ আচরণ।

 

সকলের বিন্দু আলোয় গড়বো এ সমাজ

রুখে দিবো নোংরামি, করে ভালো কাজ।

পরবর্তী প্রজন্মের রাস্তা করি জঞ্জাল মুক্ত

 

তবে গড়বে দেশ সুখ, সমৃদ্ধ ও শান্তি যুক্ত।

তাপসকিরণ রায়ের কবিতা

  তাপসকিরণ রায়ের কবিতা--    বেজন্মা     আগাছা পতিত জমিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে আনন্দ পুলক পাতাল নদীর জল সেঁচন হয়ে যাচ্ছে জীবন ঘোটালা পাকাচ্ছে বেজন্মা...